আজ সোমবার, ২০শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কাশিয়ানীতে সার্কেল এএসপির বাসায় গুলি : সন্দেহের তীর সন্ত্রাসী সনেট বাহিনীর দিকে

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর-কাশিয়ানী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারের বাস ভবনে গুলি করেছে সন্ত্রাসীরা। রবিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বাড়ির বাইরে থেকে ছোঁড়া একটি গুলি বাস ভবনের জানালার গ্লাস ভেঙ্গে ভিতরে দেয়ালে লেগে ড্রইং রুমের টেলিভিশনে গিয়ে বিদ্ধ হয়। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। উক্ত ঘটনায় জেলার পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মুকসুদপুর-কাশিয়ানী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার হুসাইন মোহম্মদ রায়হান জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তিনি বাস ভবনের বাইরে ছিলেন। স্থানীয় সেলিম মৃধার বাড়ির নীচ তলায় ভাড়া করা ফ্লাটে তার অফিস-কাম-বাসা। সেখানে তিনি তার পরিবার নিয়ে থাকেন। সন্ত্রাসীরা তার বাস ভবনে গুলি করেই রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়। গুলিটি একটি পিস্তলের গুলি। তবে এ সময় ওই রুমে কেউ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
তিনি আরও জানান, বিষয়টা নজরে রাখার পাশাপাশি আমি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। গত সপ্তাহে পুলিশের হাতে পিস্তল সনেট গ্রেফতারের ঘটনার সঙ্গে এ ঘটনার যোগ সূত্র থাকতে পারে। এ ঘটনায় কাশিয়ানী থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য সম্প্রতি কাশিয়ানীতে ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনায় মুকসুদপুর সার্কেল সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান নেতৃত্ব দিয়ে সন্ত্রাসীদের টার্গেটে পরিনত হন।

কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আলীনূর হোসেন পিপিএম জানান, গত ১৭ ডিসেম্বর উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন শেষে রাত সাড়ে ৮টায় একটি সাদা মাইক্রোতে কয়েকজন অস্ত্রধারী যুবক কাশিয়ানী অগ্রণী ব্যাংকের সামনে থেকে কাশিয়ানী এম এ খালেক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এ জি এস মোঃ মাহমুদুল ইসলাম শিকদার (১৮) কে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে যায়। মুকসুদপুর সার্কেল সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান অভিযান চালিয়ে ওই ভিকটিম মাহমুদুল ইসলামকে মাত্র এক ঘন্টার মধ্যেই উদ্ধার করেন।

এ ঘটনার জের ধরে র্শীষ সন্ত্রাসী সাত মামলার আসামী (বর্তমানে নয় মামলার) সনেট ওরফে পিস্তল সনেট (৩৫) কে গ্রেফতার করে পুলিশ। সনেটের স্বীকার উক্তি মোতাবেক ১৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাতইল ইউনিয়নের চাপ্তা বালুর মাঠে অস্ত্র উদ্ধার করতে গেলে সনেটের সঙ্গীরা পুলিশের উপর হামলা করে এবং এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে ঘণ্টা ব্যাপী গুলি বিনিময় হয়। এ সময় সনেট ওরফে পিস্তল সনেট গুলিবিদ্ধ (পায়ে) হয়।

ঘটনাস্থলেই ডিবি পুলিশের এস আই, গনেশ, কনেস্টেবল মোঃ ফরহাদ ও মোঃ মাসুদ আহত হয়। আহতদের প্রথমে গোপালগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সনেটকে পঙ্গু হাসপাতালে পাঠনো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই অভিযান চালিয়ে গুলি, মেগজিম ও একটি বিদেশী পিস্তল উদ্ধার করে। এ কারণে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মুকসুদপুর সার্কেলের বাসায় গুলি করা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।